🔥🇧🇩 
খড়ের চালের শাঁতি লাইনে গর্তে ডোবা বালির শুনিয়া।
এইটুকু ঘরে গুটিসুটি মেরে বেঁচে থাকা,
যতটুকু বাঁচি — আতঙ্কে ঢাকা প্রতিটা রেখা।
অরণ্যের ভেতরে চলে জ্বালানি কাঠ কাটার যাত্রা,
ক্ষুধার আগুনে পোড়া শরীরেও লুকিয়ে অভিযান মাত্রা।
মাইল-দেড়েক দূরের ওয়াটার পয়েন্ট — জলভরা কলসি হাতে,
গরম ধুলোয় দৌড় আমার, জীবন টিকে থাকার রাতে।
রেশন লাইনের শেষে দাঁড়াই সকাল থেকে রাত্রে,
দু’চোখে স্বপ্ন — পেট ভরবে আজ হয়তো আধভাতে।
কতদিনই বা জুটতো না কিছুই — শুধু ভাঙা চাল আর পাথর মেশানো ডাল,
তেল হলো তলানির তরল — আবর্জনায় ভরা কালো জাল।
ক্ষুধার তাড়নায় দম বন্ধ হয়, ভগ্ন দেহে চোখে জ্বালা,
চর্ম রোগ, খোস-পাঁচড়া, কনজাংটিভাইটিস — নিত্যরালা।
লাঠির মতো পাতলা আমি — শুকনো হাড়ের কাঠি,
তবু বুকের ভিতর গর্জায় স্বাধীনতার ডাকে মাতি।
উপর দিয়ে শোঁ শোঁ করে উড়ে যেত মৃত্যু বোমা,
ভারত থেকে পাকিস্তানের ঘাঁটিতে, আবার তারা ফেরায় হিংসার চমা।
একটা মাত্র ভুল নিশানা — একটা মাত্র খসে পড়া গোলা,
আমাদের শিবির — মুহূর্তেই ছাই, কারো নেই রক্ষা-বোলা।

বাবা তখন বীরের মতো ২৭ মার্চেই করেছেন বিদ্রোহ,
তার কোম্পানির বুকে গর্জে ওঠে মুক্তির রণদোহ।
কৈলাসশহর থেকে কুলাউড়া, মৌলভীবাজার, চাতলাপুর,
গর্জে ওঠা বুলেটে জ্বলে উঠত স্বাধীনতার নীল সুর।
অগ্রজ ভাই হয়েছেন গেরিলা — দেশের বুকেতে প্রবেশ,
স্বাধীনতার লড়াইয়ে লুকিয়ে আছেন বিপদের পরিবেশ।
স্বপ্নে দেখি দু’জনের মৃতদেহ — বুক চিরে ওঠে আর্তনাদ,
হয়তো কালই শুনবো খবর — শেষ হলো তাদের সাধ।

নয়টি মাস — শুধু ভয়, ক্ষুধা, আশ্রয়হীন রাত,
আর রক্তাক্ত ইতিহাসের বুকে লড়ে যাওয়া দেশের মাত।
দুঃখ আর দহনেই গড়া আমাদের বিজয়লেখা,
অন্ধকার ছিঁড়ে সূর্য উঠল — দেশ পেলো মুক্তির দেখা।
আমি তখন এগারো বছরের — ক্ষুদে, ক্ষতবিক্ষত যোদ্ধা,
ভয় তাড়া করতো, তবু বুক ভরা ছিলো অদম্য প্রতিজ্ঞা।
ক্ষুধার জয়, ভয়ের জয় — আমারই ছোট্ট বিজয়,
সেই যুদ্ধে জন্ম নিলো এক পতাকা — রক্তমাখা পৃথিবীর নতুন অক্ষয়। 🇧🇩🔥

আমার বইগুলো আপনি কিনতে পারবেন এমাজন থেকেঃ
https://www.amazon.co.uk/s?k=imran+chowdhury+bem+books&crid=PVX2G021J0LF&sprefix=imran+%2Caps%2C118&ref=nb_sb_ss_mvt-t11-ranker_6_6

